রাত
কালো হতে পারে,
পূর্ণিমারাতও হতে পারে।
একাত্তরের পঁচিশে মার্চের রাত ছিল
বাঙালির জন্য কালরাত। হ্যাঁ, কালরাত। সে রাতে
আকাশে চাঁদতারা ছিল কি না তা
হয়তো কারও কারও
মনে থাকতেও পারে, কিন্তু পঁচিশের রাতকে যে
দৃষ্টিতে কালরাত বলা হয়,
তার সঙ্গে সাদা-কালোর কোনো
সম্পর্ক নেই। সেটা
ছিল বাঙালির জীবনে ভয়ঙ্কর এক রাত। যে
রাতে ভয়ঙ্কর বিপদের আশঙ্কা ছিল। মানে
কালরাত। লেখার সময়
কালরাত, কিন্তু পড়ার সময়
কালোরাত। অথচ এই
দিনটি এলেই পত্রপত্রিকা, ব্লগের পাতায় পাতায়
দেখা যায় কালোরাতের ছড়াছড়ি।
অন্ধকার রাত আমাদের দেশে প্রতিমাসেই আসে, প্রতিবছর বারবার আসে। কারণ
অমাবস্যার রাতগুলো নির্দিষ্ট সময় পর
পর আসবেই। আসেও। তার
সঙ্গে বাঙালিজীবনের পঁচিশে মার্চের কোনো তুলনা
থাকতে পারে না।
থাকেও না। কিন্তু আমরা লিখতে গিয়ে
সেই ‘কাল’-এর
গুরুত্বকে খাটো করে
ফেলি। যার ফলে
ওই রাতটিও অন্য স্বাভাবিক একটা অমাবস্যা রাতের মতো
সাধারণ হয়ে যায়।
বাংলা
উচ্চারণতত্ত্বে একটা নিয়ম
আছে। সন্ধি বা
সমাস যে-কোনো
কারণেই হোক না
কেন, দুটো শব্দ
যখন এক করে
লিখতে হয় তখন
প্রথম শব্দের শেষ অক্ষরটির উচ্চারণ ও-কারযুক্ত হয়। যেমন লোক+কবি=লোককবি (উচ্চারণ লোকোকবি)। এমনিভাবে লোকগান (লোকোগান), দেশদ্রোহী (দেশোদ্রোহী), দেশব্যাপী (দেশোব্যাপী), দেশনেত্রী (দেশোনেত্রী) ইত্যাদি। উচ্চারণ অনুযায়ী এসব শব্দ
শুনতে শুনতে আমরা
লিখতে গিয়ে ধন্ধে
পড়ি। তখন উচ্চারণের ও-কারটাকে লিখিতরূপে ব্যবহার করি। তাতে
করে লেখার অর্থটাই যায় পাল্টে। তাই এসব
সূক্ষ্ম ব্যাপারেও সবার নজর
থাকা প্রয়োজন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন