লিখতে
গিয়ে আমাদের হ্রস্ব ই-কার
আর দীর্ঘ ই-কার নিয়ে
ঝামেলার শেষ থাকে
না। এ দিকে
একটু মনোযোগ দিলেই অনেকটা নির্ভুলভাবে লেখা সম্ভব। চাইছিলাম ব্যাকরণের দিকে যাব
না, কিন্তু সেটা পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না।
তবে যারা ব্যাকরণের ধারেকাছে ঘেঁষতে চান না
তাদেরকে বলছি, বিশেষ্য বিশেষণ দেখেই ভয়
না পেয়ে খেয়াল
করে দেখুন, আপনার
জানার বাইরে এখানে
তেমন কিছু নেই।
সুখি
লিখব, নাকি সুখী,
ধনি নাকি ধনী-এ নিয়ে
লিখতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। এ
ক্ষেত্রে কয়েকটা বিষয়ের দিকে খেয়াল
রাখতে পারলে ল্যাটা অনেকটা চুকে যায়।
১.
স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দের শেষে সব
সময় দীর্ঘ ই-কার ব্যবহার করতে হবে। গাভী
দাসী নারী রানী
পিশাচী মানবী তরুণী
যুবতী।
২.
বিশেষ্য শব্দের শেষে দীর্ঘ
ই-কার ব্যবহার করে বিশেষণ শব্দ তৈরি
হয়। যেমন, সুখ
সুখী, ধন ধনী,
হিসাব হিসাবী। এইভাবে ঋণ ঋণী,
রোগ রোগী, দেশ
দেশী, পাপ পাপী,
বিনয় বিনয়ী, দুঃখ
দুঃখী, শরীর শরীরী,
পাপ পাপী ইত্যাদি।
৩.
শব্দের শেষে ঈয়
প্রত্যয় যুক্ত হলে
দীর্ঘ ই-কার
হয়। যেমন, আত্ম
আত্মীয়, জল জলীয়,
জাতি জাতীয়, পানি
পানীয়, বঙ্গ বঙ্গীয়, রাষ্ট্র রাষ্ট্রীয়।
৪.
বিশেষণ শব্দের শেষে ত্ব
তা ণী নী
বিদ্যা জগত্ ভাবে
ইত্যাদি শব্দ যোগ
করে যখন বিশেষ্য তৈরি করা হয়
তখন দীর্ঘ ইকার
হ্রস্ব ই-কারে
পরিবর্তিত হয়। একাকী
একাকিত্ব, কৃতী কৃতিত্ব, দায়ী দায়িত্ব, মন্ত্রী মন্ত্রিত্ব, স্থায়ী স্থায়িত্ব, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা, সহমর্মী সহমর্মিতা, সন্ন্যাসী সন্ন্যাসিনী, প্রাণী থেকে প্রাণিতত্ত্ব প্রাণিবিদ্যা
প্রাণিবাচক ইত্যাদি।
৫.
শব্দের শেষে ইক
প্রত্যয় যুক্ত হলে
প্রথম অক্ষরের সঙ্গে আকার
এবং শেষাংশে হ্রস্ব ইকার ব্যবহার হয়। প্রথম প্রাথমিক, অধ্যাত্ম আধ্যাত্মিক, অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিক, অভিধান আভিধানিক, গণিত গাণিতিক, পরিশ্রম পারিশ্রমিক, মধ্যম মাধ্যমিক।
৬.
বিদেশী শব্দের শেষে যদি
ই ধ্বনি থাকে
তবে সেখানে নিশ্চিন্তে হ্রস্ব ই-কার
ব্যবহার করা যায়।
দাবি ফরিয়াদি আসামি আমদানি তরকারি সরকারি জরুরি কালোবাজারি।
এখানে বেশি বেশি
উদাহরণ দিয়ে লেখার
আয়তন বাড়ালাম না। লিখতে
গিয়ে সমস্যা মনে হলে
এই শব্দগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে নিলেই হয়।
[জহিরুল ইসলাম]
আমার মতে ওপরের লেখা গ্রহণযোগ্য।
উত্তরমুছুন